জাকির হোসেন: বাংলাদেশের সাথে ঘা ঘেষা গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা।
এই উপজেলা সীমান্তগুলো এখন চোরাচালানের এক স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে,আজ ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিজিবি এক অভিযানে ২৭টি গরু মহিষ আটক করা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশে ৬ বাংলাদেশীকে আটক করেছে ভারতীয় পুলিশ। প্রতিদিন হাজার হাজার গরু-মহিষ প্রবেশ করছে বাংলাদেশে আর ভারতে পাচার হচ্ছে ভূর্তুকী দিয়ে আমদানী করা বাংলাদেশের মটরশুটি। বেন্ডটিস করিম,ইউপি মেম্বার মুনসুর সহ লাইনম্যান’র চাদাঁবাজী নিয়ে ত্রিমুখি সংঘর্ষে ইউ/পি সদস্য সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত আসছে ভারতীয় গরু-মহিষ, মোবাইল, কসমেটিক্স পণ্য সহ বিভিন্ন রকমের মাদকদ্রব্য। টাকার বিনিময়ে বিজিবির অগোচরে লাইনম্যানের দেওয়া সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় চোরাকারবারীরা লোভের মুহে পড়ে গরু-মহিষ আনতে ভারতে প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের কিছু শ্রমজীবি মানুষ। জীবনের ঝুকি নিয়ে এই মানুষগুলো অর্থের লোভে সীমান্ত অতিত্রুম করে। সম্প্রতি জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু-মহিষ আনতে ভারতে প্রবেশ করার পর ৬ জন বাংলাদেশীকে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। এর মধ্যে প্রায় ১ মাস পূর্বে ভারতের আমলেরেম এলাকায় আটক হয় হরিপুর অঞ্চলের বালিপাড়া কুমারচটি গ্রামের নামিজ আহমদ, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের ৪নং বাংলাবাজার এলাকার সুজন সহ অজ্ঞাত আরো ২ জন, ১৩ অক্টোবর লালাখাল সীমান্ত দিয়ে ভারতের কেলেরিয়ায় আটক হয় জৈন্তাপুরের ৩নং চারিকাটা ইউনিয়নের তুবাং গ্রামের রুহুল আমীন ও লালাখালের বুতই মিয়া।
একটি সূত্র জানিয়েছে আটককৃতদের ভারতের পুলিশ জোয়াই জেল হাজতে প্রেরণ করেছে এদের মধ্যে ২ জন আটক হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন বিজিবির ১৯ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রফিকুল ইসলাম (পিএসসি)। এদিকে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিজিবি গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে জৈন্তাপুর উপজেলা ঘিলাতৈল ফুলবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিজপাট এলাকার চোরাকারবারী আব্দুল জলিলের ১৪টি ভারতীয় মহিষ ও ভারতীয় ১৩ টি গরু এবং ৭ বস্তা মটরশুটি আটক করে।
তাছাড়া লালাখাল এলাকায় দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা মটরশুটি, মটর ডাল ভারতে পাচার করছে চোরাকারবারী দলের সদস্যরা। অনেক সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি কিছু সংখ্যক গরু-মহিষ এবং ভারতে পাচার করা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে যা কেবল মাত্র লোক দেখানো ঘটনা গত ১৩ অক্টোবর উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক বৈঠকে সীমান্তের চোরাচালান বিষয়ে কঠোর সমালোচনা হয়। বৈঠকে বিজিবি ও পুলিশ’র মাধ্যমে সীমান্তে চোরাচালান কঠোর হস্তে দমন সহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
অন্যদিকে ১৪ অক্টোবর ভোরে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের সরকারী পশুর হাটে ভারত থেকে অবৈধ পথে নিয়ে আসা কথিত বিজিবি-পুলিশের লাইনম্যান নামে পরিচিত ও চোরাকারবারী দুই গ্রুপের মধ্যে গরু-মহিষ’র চাদাঁর টাকা নিয়ে সংঘর্ষে ইউ/পি মেম্বার মুনসুর সহ ১০ আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন উপজেলার বাউরভাগ গ্রামের রাহিম আহমদ (২৩), শরীফ আহমদ (২৫), নিজপাটের আমান উল্লাহ (২৯), মোকামবাড়ীর তাজ উদ্দিন (২২), ঘিলাতৈল গ্রামের আলমঙ্গীর হোসেন (২৫), রুবেল আহমদ (২৬) এবং গৌরীশংকর গ্রামের নিজপাট ইউ/পির সদস্য মনসুর আহমদ (৪২)। এদের মধ্যে ৪ জনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এব্যাপারে ১৯ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রফিকুল ইসলাম (পিএসসি)’র আলাপকালে তিনি বলেন লালাখাল সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে ভারতীয় পুলিশ ২ বাংলাদেশী যুবক কে আটক করে নিয়ে যায়, তবে অধিক লোকজন আটক হলেও আমাদের জানা নেই। আটককৃত গরু-মহিষ কাষ্টমের মাধ্যমে নিলাম দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে জৈন্তাপুর ও লালাখাল সীমান্ত দিয়ে লাইনম্যান বেন্ডটিস করিম ও মেম্বার মুনসুর ও ভাতিজা রুবেল এসবে প্রভাব খাটিয়ে এ চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে যার মধ্যে অন্যতম লালাখালের ৪/৫ জন, নিজপাট জৈন্তাপুরের ৭/৮ জন, যাদের পিছনে কাজ করছেন সমাজের মুখোশধারী সুশীল ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রনেতা।